মেজাজ এতো খারাপ যে বিস্তারিত লেখা অসম্ভব।
যখন কোন ছবিতে নারী পুরুষের একতরফা মারামারির দৃশ্য বিশেষত পুরুষ মহিলার গায়ে হাত তুলছে এরকম কিছু দেখায়, এবং তাতে দর্শককে তালি দেয়ার জন্য কোন পরিচালক প্ররোচিত করে এবং তাতে সাফল্য পায়, তখন মনে হয়, এই চ বর্গীয় টাইপের ছবি যে বানিয়েছে এবং লিড রোলে যে বা যারা অভিনয় করেছে এরাও আসলে চ বর্গীয়।
মাতাল, মাদকাসক্ত, সাইকোপ্যাথ, অতিমাত্রায় পজেসিভ প্রেমিক, পার্সোনালিটি ডিজ অর্ডার ওয়ালা লোকজন, ইরেকটাইল ডিসফাংশনওয়ালা রোগী সমাজে ভুরিভুরি। গার্ল ফ্রেন্ড বা স্ত্রীর সাথে আ্যবিউসিভ সম্পর্কও দেখা যায় অহোরহো। অনেকেই বলতেছে, কবির সিং এরকম একটা চরিত্র। ওকে ফাইন। হ্যা হতেই পারে। চরিত্রায়নের দরকারে অনেক কিছুই দেখানো লাগতে পারে, ইভেন বাস্তবে মেয়েরা এসব ছেলেদের প্রেমে পরে, সেটাও মিথ্যা না।
আ্যবিউসিভ রিলেশনশিপ এবং এরকম হাইলি ফ্রিকি টেমপার্ড চরিত্র নিয়ে দুনিয়াতে কম ছবি হয়নি। অস্কার প্রেয়েছে এরকম ছবিও আছে। রেভোলিউশনারি রোড, ওয়াক ইন দ্যা লাইন, গ্রেট গ্যাটসবি’র মত ছবিতে আ্যবিউসিভ সম্পর্ক বা চূড়ান্ত রকমের ম্যাস্কিউলিনিটি দেখানো হয়েছে। কিন্তু সেসব অবশ্যই সোশ্যাল ডিসফাংশনালিটির যৌক্তিক রিপ্রেজেন্টেশন। সেখানে এসবের মাধ্যমে প্রেম ভালবাসার জন্ম হয়, প্রেমের মাহাত্ম আসে কিংবা নায়ক আসলে ইনোসেন্ট এরকম কোন ইন্টেনশন বা রিপ্রেজেন্টেশন পরিচালকের নেই।
কিন্তু পরিচালক যখন নারীর আ্যবিউজিংকে মহিমান্মীত করে এবং দর্শক তাতে তালি দেয়, সেই ছবি ১০০ কোটি টাকা ব্যাবসা করে ফেলে, তখন মনে হয় সমস্যাটা পরিচালক ও লেখককে দিয়ে শুরু হলেও কোটি কোটি মানুষ তাতে ইতিমধ্যে সংক্রমিত হয়ে গেছে।
বাস্তবে আসলে এসব চরিত্রের সাথে কী ঘটে? এদের প্রেম টেকে না, বিয়ে হলে সংসার পুরা নরক হয়ে যায়। বাবা-মায়ের কষ্টের শেষ নেই। কেউ কেউ সামাজিক অপরাধ করে অপরাধী হয়ে যায়, এরা সকলের জীবনে ঝামেলা ও বিভীষিকার মত বিদ্যমান। আমাদের মত অনুন্নত দেশে হয়তো এসব চরিত্রের কোন মানসিক চিকিতসা বা তেমন কিছুই হয়না। এজন্য আমাদের সমাজে ধর্ষক, খুনী, নির্যাতক, দূর্নীতিবাজ অনেক বেশি।
যাই ঘটুক, কবির সিং এ যা ঘটেছে বাস্তবের সাথে তার কোন মিল নেই। মিল থাকার ও কথা না। সাইকোপ্যাথ চরিত্রের গ্লোরিফিকেশন না দেখিয়ে মানসিক চিকিতসা নেবার বিষয়টা দেখালে তো আর এইসব সোসাইটিতে শত কোটি টাকা ব্যাবসা করবেনা এই সিনেমা।
এই ছবি আসলে এই অসুস্থ সমাজকে আরও অসুস্থ করে তোলার একটা টুল ছাড়া আর কিছু হল না। যেখানে পিংক এর মত ছবি হয়, সেখানে ভারত এর মত হিরোগিরি দেখানোর অযৌক্তিক কনটেন্ট আর কবির সিং এর মত ম্যাস্কিউলিনিটির সেলিব্রেশন করা ছবি হবে ভাবতেও কষ্ট হয় এই ২০১৯ এ এসে।
শহীদ কাপুরের অভিনয় প্রশংসা করতেছে অনেকে। আমিও করি। কিন্তু তরোয়াল দিয়ে ঘাস কাটলেও সেটা ঘাস কাটাই হয়, যুদ্ধ হয়না। আর কি বলবো। কেন যেন মেজাজ খারাপ কাটতেছেনা। ক্যান যে দেখলাম 🙄!