পাকিস্তানের কথা বাদই দিলাম। ভারতের কথা বলি। প্রাচীন সভ্যতা ও সংস্কৃতির ধ্বজাধারী এই দেশটি এখন ধর্ষণের স্বর্গরাজ্য। উচ্চবিত্ত অভিজাত-বিদেশী ট্যুরিস্ট-মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত বস্তিবাসী নারী কেউ নিরাপদ নয় সেখানে। এক দশক আগেও অবস্থা এতটা করুণ ছিল না। কিন্তু এখন কেন? কোন দেশের মানুষের মন-মানসিকতা ও আচরণ তৈরি হয় অনেক কিছুকে ঘিরে, যেমন, আইনের প্রয়োগ, বিনোদন মাধ্যমের ধরণ, ধর্ম, সামাজিক মূল্যবোধ ইত্যাদি; বিনোদন ছাড়া আর তেমন কিছুতেই পরিবর্তন আসেনি এ কয়েক দশকে। ওদেশের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য, ঐতিহ্য এবং সমৃদ্ধির প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, এখন ওদের বিনোদনের যে মেইনস্ট্রিম কালচার তৈরি হয়েছে , তা দিয়ে বিনোদনকে তারা সবচেয়ে জঘন্য ও ধ্বংসাত্মক মাধ্যমে পরিণত করেছে। এবং এর প্রভাব শুধু ভারতে না, সারা পৃথিবীতেই পড়বে। ভারতের মানুষ বিনোদনের জন্য সবচেয়ে বড় বিনোদন মাধ্যম বলিউড এর উপর নির্ভরশীল। বলিউডে কী দেখানো হয় ভেবে দেখুন। ৯০ ভাগ চলচিত্রই ব্যাবসার খাতিরে সামাজিক মূল্যবোধবিরোধী আচরণ দেখায়। হ্যাঁ মানছি তাদের উপাস্থাপনা কৌশলপূর্ণ এবং শৈল্পিক। কিন্তু সেটার প্রভাব খারাপ। আমি গত ৭-৮ বছর এর মধ্যে বাবা মা’র সামনে যেকোন একটি হিন্দি চ্যানেলে ১০ মিনিটের বেশি থাকতে পারি নি, রিমোট ঘুরাতে হয়েছে। “চিকনি চামিলি” আর “শীলা কি জাওয়ানী” হল বলিউডের সবচেয়ে ব্যাবসা সফল হিট আইটেম এবং এগুলোর সাফল্যের পরে প্রতিটি ছবিতেই এ ধরণের আইটেম সং রাখতে হচ্ছে। এগুলোর শিল্প মান নিয়ে বলছি না, কিন্তু নিঃসন্দেহে এ ধরণের Extreme যৌন আবেদন জাগানিয়া নৃত্য ও সংগীত আমাদের সামাজিক মূল্যবোধকে আঘাত করে। এ সমস্যার সমাধান হিসেবে কোন ধর্মীয় সহী মাজেজা শুনতে রাজী নই, কিন্তু এই ধর্ষকামী পরিচালক, প্রযোজক, সেন্সরবোর্ডের বিচারক এবং আইন নিয়ন্ত্রকদের বোধোদয় কামনা করি। তাদের তথাকথিত সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক বিশ্বায়ন এর বুলি ও নীতির পিছনে ছুপা রুস্তমের মত লুকিয়ে থাকা শতকোটি টাকার লোভ আর সীমাহীন যৌনাচার এর শিকার হতে হচ্ছে দেশের নারী-পুরুষ উভয়কেই।
ভারত, বলিউড ও ধর্ষণ সংস্কৃতি
ফেসবুকের মাধ্যমে মন্তব্য করুন: