একটা পাঞ্জাবী ছেলে দিল্লীতে গাড়ি সারার গ্যারেজে কাজ করত। অবসরে কোন কাজ না থাকায় গ্যারেজের পাশের লাইব্রেরীতে বই পড়ত। রহস্য উপন্যাস পড়বার নেশা হয়ে গেছিল। কিন্তু একদিন হাতে পড়ল রবীঠাকুরের হিন্দি অনুবাদের একটি বই। উলটে পালটে দেখতে গিয়ে সে ঢুকে গেল ভেতরে। আর অমনি ম্যাজিকের মত তাঁর রুচি, অভ্যাস, ভাললাগা-ভালবাসা সব বদলে গেল।
সে গোগ্রাসে পড়ে ফেলল রবীর হিন্দি অনুবাদের লেখাগুলো। আগ্রহ এত তুঙ্গে উঠল যে সে বাংলা ভাষাটাই শিখে ফেলল। একে একে পড়ে ফেলল শরৎচন্দ্র আর রবীর সব উপন্যাস-কবিতা-গান। সে গভীরভাবে ভালবেসে ফেলল বাংলা ভাষাকে।
বাংলা ভাষার ভাল লাগা সব কবিতা-গান-উপন্যাস দ্বারা প্রবলভাবে প্রভাবিত হয়ে সে একের পর এক কবিতা লিখতে লাগল হিন্দি ভাষায়। চিত্রনাট্যও লিখল। এবং সেগুলো গিয়ে পড়ল আবার বাঙ্গালী পরিচালক বিমল রায়ের হাতেই। তিনি সযত্নে প্রতীভা রত্নটি তুলে নিয়ে সুযোগ করে দিলেন তাঁকে বিকাশের। তারপর সে একে একে যা উপহার দিতে থাকল তা শুধু বলিউডের গানের ভাষাকেই বদলে দেয়নি, বদলে দিয়েছে চিত্রনাট্যের ভাষা ও পরিচালক-দর্শকের চিন্তার জগতও। তিনি গুলজার। আবিস্কার করতে সময় লাগল তাঁকে। রবীন্দ্রনাথের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গুলজারের এই প্রয়াস দারুন প্রশান্তিদায়ক।